ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫ , ২৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে উত্তাল দেশ ওয়ালটন প্লাজা থেকে ৫০ হাজার টাকা সহায়তা পেলেন নাটোরের গৃহিণী কমেছে ইন্টারনেট ও ফোনের ব্যবহার গাজায় গণহত্যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা বাংলাদেশের প্রতিবাদ না করলে মানবতার দুঃসময় কাটানো সম্ভব হবে না-ইলিয়াস কাঞ্চন গ্যাস সঙ্কটে ত্রাহি অবস্থায় দেশের শিল্প উৎপাদন বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারের উদ্যোগ ইতিবাচক লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ বিডিআরের চাকরিচ্যুত সদস্যরা : আহত ৭ প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অন্নপূর্ণা-১ শিখরে বাবর আলী রাজনীতির ময়দানে টিকে থাকতে জাপা’র পরিকল্পনা গাজায় গণহত্যা : চার জেলায় বাটা-কেএফসিতে হামলা-ভাঙচুর হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রীর নামে মামলা করবে দুদক যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় ২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা টোল আদায় ভাড়া বেশি নেয়ার প্রতিবাদ করায় বাসের ভেতরেই যাত্রীকে ছুরিকাঘাত বাংলাদেশে ব্যবসা করার অনুমোদন পেল স্টারলিংক ভোটের প্রস্তুতিতে সংস্কার প্রস্তাবে গুরুত্ব কম ওয়াকফ আইন পুনর্বিবেচনা করতে ভারতকে আহ্বান বিএনপি’র কক্সবাজারে জমি নিয়ে বিরোধে সংঘর্ষ, মসজিদের খতিবসহ নিহত ৩ ছুটির পর শিক্ষার্থীদের পদচারণায় আবারও মুখর ঢাবি ক্যাম্পাস অবশেষে লম্বা ছুটি কাটিয়ে খুলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

৪০ বছরের কাজ ৪ বছরে শেষ করেছি : মেয়র তাপস

  • আপলোড সময় : ২০-০৫-২০২৪ ১২:০০:৫৮ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২০-০৫-২০২৪ ১২:০০:৫৮ অপরাহ্ন
৪০ বছরের কাজ ৪ বছরে শেষ করেছি : মেয়র তাপস মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ঢাকায় গত ৪০ বছরে যে কাজ হয়নি তা গত ৪ বছরে মেয়র হিসেবে দায়িত্বে নেয়ার পর শেষ করেছিগতকাল রোববার ঢাকা দক্ষিণ সিটির নগর ভবনে মেয়র তাপসের দায়িত্বভার গ্রহণের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত উন্নত ঢাকার উন্নয়ন অগ্রযাত্রার ৪ বছরশীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র এ মন্তব্য করেনমেয়র তাপস বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় মাত্র ২৪টি অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছিলগত চার বছরে আমরা নতুন ৪১টি অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র নির্মাণ করেছিবাকি ওয়ার্ডগুলোতেও অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র নির্মাণে আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছেতিনি বলেন, জলজট ও জলাবদ্ধতা এ শহরের পুঞ্জিভূত সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতমসামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যেত এ শহরের প্রায় ৭০ শতাংশ এলাকাএ সমস্যা নিরসনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন খাল, বক্স কালভার্ট ও নর্দমা থেকে বার্ষিক সূচি অনুযায়ী বর্জ্য ও পলি অপসারণ করে চলেছেএছাড়াও জলাবদ্ধতাপ্রবণ মোট ১৬১টি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ২৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে নিজস্ব অর্থায়নে ১০৯টি স্থানে জলাবদ্ধতা নিরসনে অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হয়েছে২৬টি স্থানে অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে এবং বাকি ২৬টি স্থানে অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছেইতোমধ্যে শ্যামপুর বাণিজ্যিক এলাকা, মিডফোর্ড রোড, নটরডেম কলেজের সামনের সড়ক, বঙ্গভবনের দক্ষিণ ও পশ্চিম অংশের রাস্তা, বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে সড়ক, বাংলাদেশ সচিবালয়, লালবাগ রোড, আজিমপুর মোড়সহ অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা ও জলজট সমস্যার সমাধান হয়েছেফলে জলাবদ্ধতা সমস্যা ৭০ শতাংশ হতে ১০ শতাংশে নেমে এসেছে
শেখ তাপস বলেন, দায়িত্বভার গ্রহণের প্রথম দিন থেকেই করপোরেশনের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাফিলতি, অনিয়ম, দুর্নীতি দূর করার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমি শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছিদায়িত্ব পালনে অবহেলা, গাফিলতি ও দুর্নীতির দায়ে গত চার বছরে বিভিন্ন স্তরের ৩৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছেমেয়র বলেন, করপোরেশনের প্রাত্যহিক কার্যক্রম সম্পাদনে জনবলের যে তীব্র সংকট ছিল তা উত্তরণে গত চার বছরে ভারি গাড়ির ১৪৩ জন চালক, ৬৬ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী, ৭৭ জন হিসাব সহকারী, ২৭ জন রেভিনিউ সুপারভাইজার, ৩১ জন পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক, ২০ জন স্প্রে-ম্যান সুপারভাইজারসহ বিভিন্ন বিভাগে সর্বমোট ৮৭৯ জন জনবল নিয়োগ দেয়াসহ ২১৭ জনের নিয়োগ কার্যক্রম বর্তমানে চলমান রয়েছেমেয়র তাপস বলেন, বৈশ্বিক করোনা মহামারির সংকটকালে আমি দায়িত্বভার গ্রহণ করিতথাপি করোনা মহামারির মাঝেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করতে প্রায় সব খাতেই আমরা আমূল পরিবর্তন আনতে সচেষ্ট হইএকটি উন্নত, বাসযোগ্য ঢাকা বিনির্মাণে বিগত চার বছরে করপোরেশনের বিভিন্ন খাতে বিদ্যমান অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করে সুশাসন নিশ্চিত, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন সাধন, আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলসহ মান্ডা, শ্যামপুর, জিরানি ও কালুনগর খাল পুনরুদ্ধার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টিতে উদ্যোগ গ্রহণ, বছরব্যাপী সমন্বিত মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন, ঢাকার সচলতা আনয়নে বহুমাত্রিক উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, দশকের পর দশক ধরে চলা দখল সাম্রাজ্যের অবসান ঘটানো, প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ-উদ্যান-কাঁচাবাজার, গণশৌচাগার প্রতিষ্ঠা, জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ও বাস্তবভিত্তিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন এবং সর্বোপরি ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে ঢাকাকে বিশ্বের বুকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করতে নানাবিধ কর্মকাণ্ড পরিচালন ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং তা অব্যাহতভাবে চলমান রয়েছেতিনি বলেন, দায়িত্বভার গ্রহণের পর মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ঢেলে সাজাতে আমরা সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দেইসে লক্ষ্য বাস্তবায়নে ২০২০ সালের ৬ জুন আমরা বছরব্যাপী সমন্বিত মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শুরু করিবর্তমানে সূচি অনুযায়ী সারা বছরই আমরা এই কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছিশুধু তাই নয়, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বেগবান করতে আমরা নতুন মশককর্মী নিয়োগ দিয়েছিপূর্বে ৪২৪ জন মশককর্মী এই কার্যক্রম পরিচালনা করতোবর্তমানে ১ হাজার ৫০ মশককর্মী ও মশক সুপারভাইজার নিয়মিতভাবে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছেএকইসঙ্গে আমরা প্রয়োজনীয় যান-যন্ত্রপাতিও বৃদ্ধি করেছি
তিনি বলেন, আমার দায়িত্বভার গ্রহণের পূর্বে ৫৫১টি ফগার মেশিন, ৪৩১টি হস্তচালিত মেশিন ও ১৭টি হুইলব্যারো মেশিন দিয়ে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হতোগত চার বছরে আমরা নতুন আরও ৫৩৫টি ফগার মেশিন, ৬০০টি হস্তচালিত মেশিন ও ২৯টি হুইলব্যারো মেশিন ক্রয় করেছিএ ছাড়াও, বার্ষিক কর্মপরিকল্পনার আলোকে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনদের সঙ্গে নিয়মিত মতবিনিময়, করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (এক হাজার ৮৬টি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসা), মসজিদ-মন্দির, থানা ও পুলিশ ফাঁড়িসহ সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিয়ন্ত্রণ অভিযান পরিচালনা, কোনো ওয়ার্ডে সপ্তাহে ১০ জনের বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হলে সে ওয়ার্ডকে লাল এলাকা (রেড জোন) চিহ্নিত ঘোষণা করে চিরুনি অভিযান পরিচালনা, করপোরেশনের ১০টি অঞ্চলেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে
মেয়র তাপস বলেন, একটি বিষয় সবার কাছে পরিষ্কার করতে চাইআমাদের কাছে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ডেঙ্গু রোগীর প্রাত্যহিক যে তথ্য সরবরাহ করা হয়, করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে আমাদের সম্মানিত কাউন্সিলররা, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তারা ও মশকর্মীরা সে ঠিকানা পরিদর্শন করে এবং ডেঙ্গু রোগীর বাসস্থল ও চারপাশের ৩০০ গজ এলাকায় বিশেষ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে থাকেকিন্তু স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে সরবরাহকৃত তথ্যে নানাবিধ অসঙ্গতি থাকেফলে এডিস মশার প্রজননস্থল নিধন কার্যক্রমে আমাদের সময়ক্ষেপণ হয় এবং প্রকৃত রোগী খুঁজে বের করতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়তারপরও আমাদের গভীর তদারকির ফলে আমরা সকল রোগীর বাসাবাড়ি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকিএমন একজন রোগীও খুঁজে পাওয়া যাবে না, যার বাসা-বাড়িতে আমরা যাইনি এবং এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা হয়নিমেয়র তাপস বলেন, এভাবে যাচাইবাছাই শেষে গত বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আমরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ৯ হাজার ৭৬৪ জন ডেঙ্গুরোগী পেয়েছি (তখন সারা দেশে রোগী ছিল দুই লাখ ৭১ হাজার ১৭৫ জন), যা সারা দেশের মাত্র ৩.৬ শতাংশ। 
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স